ছোট্ট একটি দুয়া,কিন্তু দুয়াটি অনেক পাওয়ারফুল।
"আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি"
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
অর্থাৎ আপনি বলছেন, হে আল্লাহ নিশ্চয়ই আপনি পরম ক্ষমাশীল এবং ক্ষমা করতে ভালবাসেন সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন।
আল্লাহু আকবার খেয়াল করেছেন ছোট্ট এই কথা দুটিতে কি চাচ্ছেন আপনি? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি শিক্ষা দিয়ে গেছেন? আল্লাহ তায়ালার একটি নাম হল "গফুর" যার অর্থ ক্ষমাশীল। কিন্তু এই দুয়ার ভেতরে ক্ষমা করা অর্থে " গফুর " শব্দটি ব্যবহার না করে "আফুউ" ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও এই শব্দ দুটোর অর্থ একিই কিন্তু "গফুর" না করে "আফুউ" ব্যবহার করার কারন কি?
অর্থগত বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি যে আরবরা কোন সময় এই শব্দটি ব্যবহার করতেন।
ধরুন আপনি চক দিয়ে ব্লাকবোর্ড এ লিখছেন এমন সময় আপনার লেখার মাঝে কিছু ভুল শব্দ লিখে ফেলেছেন, আপনি তখন কি করবেন? নিশ্চয়ই ডাস্টার দিয়ে ভুল লেখাগুলো মুছে ফেলবেন?
আরবিয়ানরা ঠিক এই মুছে ফেলা অর্থে "আফুউ" শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন। যেমন মরুভূমি থেকে পায়ের চিহ্ন চলে গেলে তারা বলে "আফাত আসারাল ক্বাওম" মানে এটা তো মুছে গেছে! এ থেকেই আমরা "আফুউ" শব্দের অর্থ সহজভাবে বুঝতে সক্ষম।
উলামারা এই দুটি শব্দের মধ্যে অনেক পার্থক্য উল্লেখ করেছেন, কেউ কেউ বলেন যে ফরজ ইবাদত ছেড়ে দেওয়ার পর যদি ক্ষমা করে দেওয়া হয় তখন "আফুউ" ব্যবহার করা হয়। আর হারাম কাজ করার পর ক্ষমা করা হলে "গফুর" শব্দটি ব্যবহার করা হয়। আবার কারো কারো মতে,আল্লাহ তায়ালার মাগফিরাতের অর্থ হচ্ছে আল্লাহ পাক আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন কিন্তু আপনার গুনাহগুলো তারপরও লিপিবদ্ধ হয়ে থাকবে বিচারের দিন আপনাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হবে। অর্থাৎ আপনাকে ক্ষমা করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু বিচার দিবসের আগে গুনাহ গুলো মুছে ফেলা হবে না। বুখারির হাদিসে এই ধরনের একটি কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে আল্লাহ সেদিন বান্দার গুনাহ গুলো স্মরণ করিয়ে দিবে বলবেন তুমি এই গুনাহ করেছিলে? বান্দা স্বীকার করবে এভাবে সব গুনাহের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হবে আর বান্দা তা স্বীকার করে নেবে তখন আল্লাহ বলবেন আমি ইহকালে তোমার গুনাহ গুলো গোপন রেখেছিলাম আর তারপর ক্ষমা করে দিয়েছি।
উলামায়ে কেরাম বলেন এটাই হল মাগফিরাহ।
তাহলে "আফুউ" কি?
আফুউ হল মাগফিরাহ এর চাইতেও অধিক মর্যাদা সম্পন্ন ক্ষমা। "আফুউ" হল যখন আল্লাহ পাক আমাদের গুনাহ গুলো ক্ষমা করে দেওয়ার পর তা পুরোপুরি মুছে ফেলেন। এমনকি বিচার দিবসেও আমাদেরকে সেই গুনাহ সম্পর্ক জিজ্ঞেস করা হবে নাহ। আল্লাহ তায়ালা তার বান্দা এবং ফেরেশতাদেরকে এই গুনাহ গুলোর কথা ভুলিয়ে দিবেন। যেন বিচার দিবসে এই গুনাহ গুলোর জন্য আমাদেরকে অপমানিত হতে না হয়।
যেমনটি ভুল লেখা গুলো ডাস্টার দিয়ে মুছে ফেলেন। মানুষ তার পাপ কর্মের জন্য যখন একেবারে মন থেকে অনুতপ্ত হয় ক্ষমা চায়,তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা অত্যন্ত খুশি হয়ে এই ধরনের ক্ষমা করে থাকেন। " সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী "
কি অবাক লাগছে না? তবে আমরা হতে পারি সেই ভাগ্যবানদের একজন যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে দিয়ে পাপ গুলো মুছে ফেলেছেন।
Dr Sayeed Page
0 Comments